পাহাড়ি বিডি

★পাহাড়ি এলাকা সম্বন্ধে★

Breaking News

ads
Responsive Ads Here

সবুজ বৈচিত্রের শ্যামল ভূমি রাঙামাটি

সবুজ বৈচিত্রের শ্যামল ভূমি রাঙামাটি


রাঙামাটি: ‘দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা দেখিতে গিয়াছি সিন্দু, দেখা হয় নাই দু’চোখ মেলিয়া ঘরের বাইরে দু’ পা ফেলিয়া একটি ঘাসের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু’। কবির এমন অনুভূতি পাহাড়ের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা সবুজ রূপ বৈচিত্রের শ্যামলভূমি রাঙামাটি। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আনন্দ দিতে প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে পর্যটকদের মনে স্থান করে নেওয়া প্রাকৃতিক নৈসর্ঘের লীলাভূমি অন্যতম শহর রাঙামাটি।
বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বের সীমান্তবর্তী অন্যতম বড় এই জেলাটির হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড়গুলো যেন ঢেউ খেলানো শাড়ি। আকাশের মেঘ ছুঁয়ে যায় পাহাড়ের বুক। শরৎ, হেমন্ত এবং শীতে শুভ্র মেঘের খেলাও চলে সবুজ পাহাড়ের ভাজে ভাজে। ।
চারিদিকে সবুজের সমারোহ আর পাহাড় ঘেড়া এ জেলায় রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই হ্রদ। নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে অনুপম আধাঁরের রাঙ্গামাটি জেলা তার বৈচিত্রময়তার কারণে আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মনে স্থান করে নিয়েছে। তাই পার্বত্য শহর রাঙামাটি পর্যটকদের কাছে অতি প্রিয় একটি নাম। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ছুটির সুযোগে লাখো পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠবে রুপের রাণী ক্ষেত পাহাড়ী জেলা রাঙামাটি। যেকোনো ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা ভাবছেন? তাহলে রাঙামাটি ঘুরে যেতে পারেন। এখানে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ঘুমিয়ে থাকে শান্ত জলের হ্রদ। সীমানার ওপাড়ে নীল আকাশ মিতালী করে হ্রদের সাথে, চুমু খায় পাহাড়ের বুকে। এখানে চলে পাহাড় নদী আর হ্রদের এক অপূর্ব মিলনমেলা। দেখতে ও উপভোগ করতে চাইলে এবারের টানা ছুটিতে নিজে অথবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে আসুন আমাদের রাঙামাটিতে।
রাঙামাটির দর্শনীয় স্থান
রাঙামাটিতে ভ্রমণ করার জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে কাপ্তাই লেক, পর্যটন মোটেল, ডিসি বাংলো, ঝুলন্ত ব্রিজ, পেদা টিংটিং, সুবলং ঝর্ণা, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার, উপজাতীয় জাদুঘর, কাপ্তাই হাইড্রো ইলেক্ট্রিক প্রজেক্ট, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
রাঙামাটি শহর ও আশপাশের স্পট
রাঙামাটিতে ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি, জেলা প্রশাসকের বাংলো, সুভলং ঝরণা, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আবদুুর রউফের স্মৃতিসৌধ, পেদা টিং টিং, ইকো টুক টুক ভিলেজসহ দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। এগুলো দেখার জন্য সারাদিনের জন্য বোট ভাড়া নিলে ভালো।
পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু
Porjaton Brigeশহরের শেষপ্রান্তে কর্ণফুলী হ্রদের কোল ঘেঁষে ‘পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স’। ১৯৮৬ সালে এটি গড়ে তোলা হয়। আকর্ষণীয় পর্যটন মোটেলটি এখানেই। এ এলাকাটি ‘ডিয়ার পার্ক’ নামেই পরিচিত। মোটেল এলাকা থেকে দৃশ্যমান হ্রদের বিস্তীর্ণ জলরাশি আর দূরের নীল উঁচু-নীচু পাহাড়ের সারি বিমোহিত করবে যে কাউকেই। এখানেই হ্রদের ওপর ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ ঝুলন্ত সেতু। যা কমপ্লেক্সের গুরুত্ব ও আকর্ষণ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সেতুকে বলা হয় ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’। দুটি পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে কাপ্তাই হ্রদের উপর ঝুলে আছে সেতুটি। এটি দেখতে হলে পর্যটন করপোরেশনকে দিতে হবে পাঁচ টাকা। এছাড়াও এখানে আছে সময় কাটানোর অনেক উপকরণ। আছে অডিটোরিয়াম, পার্ক, পিকনিক স্পট, স্পিড বোট ও দেশীয় নৌ-যান। রাঙামাটি শহরের তবলছড়ি হয়ে সড়ক পথে সরাসরি ‘পর্যটন কমপ্লেক্সে’ যাওয়া যায়। এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। যারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সার্ভিস বাসে করে আসবেন তাদের তবলছড়িতে নেমে অটোরিক্সা রিজার্ভ ভাড়া করে যেতে হবে।
সুবলং ঝর্ণা
Shuvolong_Waterfall-01রাঙামাটি সদর হতে সুবলং এর দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার, পর্যটন ঘাট ও রাঙামাটি বিভিন্ন স্থান থেকে স্পিড বোট ও নৌ-যানে করে সহজেই সুবলং যাওয়া যায়। কাপ্তাই লেক ঘুরতে হ্রদে দেশীয় ইঞ্জিন চালিত বোট অথবা স্পীড বোটে চড়ে বেরুলে প্রথমেই চোখ যাবে পাহাড়ের কোল থেকে নেমে আসা সুভলং ঝর্ণার দিকে। বোটে করে সুভলং যাওয়ার আনন্দটাই অন্যরকম। বর্তমানে ঝর্ণায় পানি খুব বেশি নেই তবে ভরা বর্ষা মৌসুমে মূল ঝর্ণার জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উচু থেকে নীচে আছড়ে পড়ে এবং অপূর্ব সুরের মুর্ছনায় পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বর্তমানে এ এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এরপরও ঝর্ণার সৌন্দর্য পর্যটকদের মন ভরিয়ে দিতে যথেষ্ট। পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানি পাথুরে মাটিতে আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য না দেখলে বলে বোঝানোর নয়। ইচ্ছে করলে স্নান করতে পারেন ঝরনার শীতল পানিতে। ক্যামেরা থাকলে ঝটপট তুলে নিতে পারেন দুর্লভ কিছু ছবিও। ঝর্ণা দেখা শেষ হলে কিছুক্ষণের জন্য সুভলং বাজার ঘুরে আসতে পারেন। এখানে সেনাবাহিনীর একটি ক্যান্টিন রয়েছে। চাইলে সেখানে সেরে নিতে পারেন চা-নাস্তা পর্ব।

No comments:

Post a Comment